‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করায় আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেফতার করেছে ভারতের হরিয়ানা পুলিশ। তাকে ‘নারী সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য’ ও ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ প্রশাসন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও ভারতের একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮ মে দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টে অধ্যাপক মাহমুদাবাদ উল্লেখ করেন, “যদি ডানপন্থিরা শুধু সেনা নারী কর্মকর্তাদের অভিনন্দন না জানিয়ে, একইভাবে বিজেপির ঘৃণানীতির শিকার সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তারও দাবি করতেন, তাহলে তা আরও অর্থবহ হতো।” এই পোস্টকে ঘিরেই বিতর্ক তৈরি হয়।
হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশন অভিযোগ করে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি নারী সেনা কর্মকর্তাদের অপমান করেছেন এবং ধর্মীয় উত্তেজনা উসকে দিয়েছেন। তাকে ২৩ মে’র মধ্যে কমিশনের সামনে হাজির হতে বলা হয়, অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
অধ্যাপক মাহমুদাবাদ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বক্তব্যে কোনো নারীবিদ্বেষ নেই এবং তিনি সাধারণ নাগরিক ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা নিয়েই কথা বলেছেন। তিনি দাবি করেন, তার বক্তব্যকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিকৃত করা হয়েছে।
তাকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। ভারতের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষাবিদ, শিল্পী, অধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা এক যৌথ বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার এবং হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রকাশ্য ক্ষমা দাবি করেছেন। তারা একে বাক-স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত বলেও উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, মাহমুদাবাদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি কেবলমাত্র সংবিধানসম্মতভাবে মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করেছেন, যা কোনোভাবেই অপরাধ হতে পারে না।