পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর হামলার পর দেশটির মুদ্রা রুপির মান ডলারের বিপরীতে নন-ডেলিভারেবল ফরোয়ার্ড (এনডিএফ) মার্কেটে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে এই খবরটি জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৭ মে) ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানোর পর এনডিএফ মার্কেটে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির বিনিময় হার কমে যায়। গত এক মাসে এনডিএফ মার্কেটে ভারতীয় রুপি যেখানে ৮৪.৬৪ থেকে ৮৪.৬৮-এর মধ্যে লেনদেন করেছে, মঙ্গলবারে তা ৮৪.৪৩২৫-এ নেমে আসে, যা হামলার পরবর্তীকালে আরও দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ভারত বুধবার পাকিস্তানে হামলা চালায়, যাতে অন্তত আটজন নিহত হন। পাকিস্তান এই হামলাকে ‘স্পষ্ট যুদ্ধ ঘোষণার কার্যক্রম’ হিসেবে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা পাকিস্তানের নয়টি স্থানে আঘাত হেনেছে, যেগুলোকে ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত মাসে ভারতের কাশ্মীর অংশে একটি ভয়াবহ হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ভারতের চালানো হামলার জবাবে তাদের সামরিক বাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে তিনটি অত্যাধুনিক রাফায়েল, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি মিগ-২৯ বিমান রয়েছে বলে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে। শুধু তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান হারানোর কারণেই ভারতের প্রায় ৮৬৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে ডনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে। এছাড়া হামলায় ৩৫ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ভারত ‘কাপুরুষোচিত’ হামলা চালিয়েছে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী এর সমুচিত জবাব দিতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছেন।
এদিকে, ভারত সরকারের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছে এবং এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, এই অভিযানে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। এই পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই nuclear শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।