মস্কোতে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ খালিদ জামালি সম্প্রতি রাশিয়ান সম্প্রচার মাধ্যম আরটি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত যদি পাকিস্তানে হামলা করে বা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে তার জবাব দেবে।
রাষ্ট্রদূত জামালি জানান, পাকিস্তানের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে যে ভারত পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, কিছু ফাঁস হওয়া নথিতে পাকিস্তানের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় হামলার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পাকিস্তান তাদের সামরিক শক্তির সম্পূর্ণ ব্যবহার করবে।
এনডিটিভি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কোনো শীর্ষ কূটনীতিকের দেওয়া এটি সবচেয়ে স্পষ্ট পারমাণবিক হুমকি। এই হুমকি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কাশ্মীরের সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন
ভারত ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে, যা ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলোর পানি দুই দেশের মধ্যে বণ্টন করা হতো। রাষ্ট্রদূত জামালি ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে অভিহিত করেন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত সিন্ধু নদীর ওপর কোনো অবকাঠামো নির্মাণের চেষ্টা করলে তারা তা গুঁড়িয়ে দেবেন। পাকিস্তান সম্প্রতি ‘আবদালি’ নামের একটি ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, যা প্রচলিত ও পারমাণবিক উভয় ধরনের অস্ত্র বহনে সক্ষম।
ভারত ইসলামাবাদের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে দেখছে। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সমুদ্র বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভারতীয় জাহাজগুলোকে পাকিস্তানের বন্দরে যেতে নিষেধ করেছে। পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতীয় পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ভারতীয় জাহাজের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে, এবং পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।