কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, পাকিস্তান সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি জোরদার করছে। দেশটির সীমান্ত এলাকায় সামরিক মহড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে, পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্য মজুদ করার এবং জরুরি তহবিল সংগ্রহের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানের বেসামরিক নাগরিকদেরও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এই যুদ্ধ প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে এবার পাকিস্তানের নারীরাও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথমবারের মতো নারী স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য ‘যুদ্ধকালীন উদ্ধার’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এই বিশেষ প্রশিক্ষণে নারীরা যুদ্ধ বা সংঘাতের সময় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করা, বোমা বা অন্য কোনো হামলায় বিধ্বস্ত এলাকা থেকে আটকে পড়া নাগরিকদের নিরাপদে বের করে আনা এবং অগ্নিকাণ্ডের মতো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রাথমিক পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করছেন।
জেলা প্রশাসন ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সীমান্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে ৩৮টি বিশেষ চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। এই চেকপয়েন্টগুলো সার্বক্ষণিক অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকবে। এছাড়াও, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৬টি সাইরেন পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেগুলোকে কার্যকর রাখা হয়েছে। কোনো প্রকার জরুরি অবস্থার সংকেত হিসেবে সাইরেন বাজানো হলে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকরা দ্রুত তাদের নির্ধারিত স্থানে এসে রিপোর্ট করবেন।
আরও পড়ুন
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানে থাকা জেলা সিভিল ডিফেন্স অফিসার তালিব হুসাইন জানিয়েছেন, অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক নাসির কায়ানি, সাদাফ জাহুর এবং নারী প্রশিক্ষক হালিমা সাদিয়া এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত থাকুক বা সংকটময় হোক, আমাদের বিভাগ সর্বদা যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”
পাকিস্তানের এই উদ্যোগ দেশটির নারীদের যুদ্ধকালীন জরুরি উদ্ধার কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে, তেমনি অন্যদিকে নারীদের ক্ষমতায়ন এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।