কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান চাপা উত্তেজনা আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারত সরকার শনিবার (৩ মে) জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক আদেশের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর করা হয়েছে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পাকিস্তান থেকে উৎপাদিত অথবা সেখান থেকে রফতানি করা কোনো পণ্য আর ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞার কোনো ব্যতিক্রম করতে হলে ভারত সরকারের সুস্পষ্ট অনুমোদন প্রয়োজন হবে। পরবর্তী সরকারি নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত পাকিস্তান থেকে সরাসরি খুব বেশি পণ্য ভারতে আমদানি করা হয় না। তবে, কিছু পণ্য বিভিন্ন বিকল্প পথে বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করত। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার এই পরোক্ষ পথগুলো বন্ধ করে পাকিস্তানি পণ্যের যেকোনো প্রকার প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, গত ২২শে এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে এক মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার পর থেকেই দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে। ভারত এই হামলার জন্য সরাসরি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে এবং এর ফলস্বরূপ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভারতের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া। পহেলগামের হামলার পরপরই নয়াদিল্লির এই ধরনের পদক্ষেপগুলো দুই দেশের মধ্যে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততার কথা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। একইসঙ্গে, পাকিস্তান এই ঘটনার একটি বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্তে অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, ভারতের পক্ষ থেকে নতুন করে আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে পড়ল।