কাশ্মীরকে ‘স্বর্গরাজ্য’ বানানোর নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘নয়া কাশ্মীর‘ নীতির অন্তরালে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। সম্প্রতি পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর মোদি সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভিন্ন চিত্র। সেখানে বলা হয়েছে, কাশ্মীর নিয়ে মোদির নীতি দমন-পীড়ন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মোদি কাশ্মীরকে সন্ত্রাসমুক্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেখানকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে নজিরবিহীন নজরদারি, দমননীতি এবং গণগ্রেফতার চলছে। ইন্টারনেট বন্ধ রাখা এবং নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণের মাধ্যমে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা জনমিতিক পরিবর্তনের অংশ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক প্রবীণদন্থী মনে করেন, মোদি সরকার পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে ভুল ধারণা পোষণ করেছিল। পেহেলগামের ঘটনা তারই প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, কাশ্মীরবাসীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। এদিকে, হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ঐতিহাসিক সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করেছে, যা রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন
আল জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মোদি সরকার কাশ্মীর সংকটকে ব্যবহার করে দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদ উস্কে দিচ্ছে। হামলার পর কাশ্মীরি ও মুসলমানদের প্রতি বিভিন্ন অঞ্চলে বৈরী মনোভাব দেখা গেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুমানন্দ্র বোস মনে করেন, বিজেপি কাশ্মীরকে আদর্শিক যুদ্ধক্ষেত্র মনে করে এবং সেখানে বাস্তব পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর এখন বিজেপির ‘নতুন ভারত’ গড়ার রাজনৈতিক প্রকল্পের অংশ।