দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও রোস্টার থেকে বাদ পড়া এবং রোস্টারভুক্ত সকল কর্মীর ভিসা নিশ্চিত করার দাবিতে ৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে মানববন্ধন করেছেন ‘এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম’ (ইপিএস) কর্মীরা।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় রোস্টারভুক্ত সকল ভিসাপ্রত্যাশী’র ব্যানারে এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা ‘বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লি.’ (বোয়েসেল)-এর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, ইপিএস-এর ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতির কারণে ভাষা শিখেও তারা বেকার জীবন যাপন করছেন। রোস্টারভুক্ত হওয়ার পরেও তাদের ফাইল কোরিয়ায় পাঠানো হচ্ছে না এবং তারা এই সমস্যার আশু সমাধান চান।
আরও পড়ুন
রোস্টারভুক্ত ভিসাপ্রত্যাশী মেহেদী হাসান বলেন, ভাষা শিক্ষার দুই বছর পার হলেই তাদের রোস্টার থেকে বাদ দেওয়া হয়। শত শত কর্মী কষ্ট ও অর্থ ব্যয় করে ভাষা শিখলেও এখন তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। তিনি বোয়েসেলের আন্তরিকতার অভাবের অভিযোগ করে বলেন, কোরিয়ায় এজেন্ট নিয়োগ করে কর্মী প্রেরণের সুযোগ থাকলেও বোয়েসেল তা করছে না।
কর্মীদের ৯ দফা দাবি হলো:
১. ২০২২ সাল থেকে বাদ পড়া ও ২০২৩ সালসহ রোস্টারভুক্ত কর্মীদের পুনরায় রোস্টার এবং ডিলিট না হওয়ার নিশ্চয়তা দিতে রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ বাধ্যতামূলক করতে হবে। ২. দুই বছরের ১০টি ইস্যুতে বছরে ৭-৮ বার কোম্পানির মালিকের কাছে কর্মীদের ফাইল পাঠানো বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং তা সিরিয়াল অনুযায়ী হতে হবে। ৩. বর্তমান রোস্টারকৃত কর্মীদের ৭৫-৮৫ শতাংশ কোরিয়ায় না যাওয়া পর্যন্ত নতুন সার্কুলার বন্ধ রাখতে হবে। ৪. কোরিয়ার প্রতিটি বাণিজ্যিক অঞ্চলে কমপক্ষে ৪-৫ জন এজেন্ট নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে, যারা ইস্যুর পূর্বে কোম্পানি মালিকদের উৎসাহিত করবে। ৫. ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনমুক্ত বাংলাদেশ ইপিএস ঘোষণা এবং আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পেলে বোয়েসেল/এইচআরডি কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয় পক্ষের সংশ্লিষ্টতা তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৬. নতুন খাত চিহ্নিত করে রোস্টারভুক্তদের সরকারি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে কোরিয়ায় প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বেসরকারিভাবে কর্মী যাওয়া বন্ধ করতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। ৭. মৎস্য, কনস্ট্রাকশন ও শিপ বিল্ডিং খাতের ভিসা নির্দিষ্ট সময়ে নিশ্চিত করতে হবে এবং রোস্টারভুক্ত কর্মী ছাড়া অন্য কাউকে ভিসা দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে খাত পরিবর্তন করে হলেও ভিসা নিশ্চিত করতে হবে। ৮. কোরিয়া প্রবাসী কর্মীরা কোম্পানি পরিবর্তন বা রিলিজ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের এজেন্টকে সশরীরে উপস্থিত থেকে সমস্যা সমাধান করতে হবে। ৯. বর্তমান সংকট নিরসনে বোয়েসেলের ব্যর্থতায় কর্মকর্তাদের পদত্যাগ এবং রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে বিচক্ষণ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বোয়েসেলকে ঢেলে সাজাতে হবে।