ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ২৬ জন নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান তীব্র উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকায় উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের বড় ধরনের হামলার আশঙ্কায় ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের গ্রামগুলোর বাসিন্দারা এখন থেকেই সুরক্ষার জন্য বাঙ্কার প্রস্তুত করছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ভাস্কর লাইভের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জম্মু-কাশ্মিরের পুঞ্চ বিভাগে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সেখানকার সালোত্রি গ্রাম, যা ভারতের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত, সেখানে পরিস্থিতি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। গত দুদিনে গ্রামটিতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এর ফলস্বরূপ, সালোত্রি গ্রামের মানুষ সম্ভাব্য বড় ধরনের হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য তাদের কমিউনিটি বাঙ্কারগুলো পরিষ্কার করছেন এবং সেগুলোকে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখছেন।
নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় এই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বেশি। তবে এই শঙ্কার মধ্যেই তারা নিজেদের সুরক্ষার প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন।
আরও পড়ুন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, পাকিস্তানি সেনারা ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে ভারতীয় সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। এর জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীও কঠোরভাবে পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সালোত্রির বাসিন্দারা জানান, ভারত সরকার তাদের জন্য এই বাঙ্কারগুলো নির্মাণ করে দিয়েছে। এগুলো অত্যন্ত মজবুত এবং বুলেটপ্রুফ। একইসঙ্গে গোলাবর্ষণের সময়ও এগুলো সুরক্ষা প্রদান করবে। বাঙ্কারগুলো মাটির প্রায় ১০ ফুট নিচে তৈরি করা হয়েছে।
এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা সীমান্ত এলাকায় বসবাস করি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেসামরিক নাগরিকদের জন্য যে বাঙ্কারগুলো দিয়েছেন, সেগুলো খুবই শক্তিশালী, বুলেটপ্রুফ এবং মাটির ১০ ফুট নিচে তৈরি। এগুলোর ভেতরে কোনো ঝুঁকি নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এখানে আমরা নিজেদেরকে খুবই নিরাপদ মনে করি।”
তিনি আরও বলেন, “জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলাকারীরা যা করেছে, তা অত্যন্ত কাপুরুষোচিত কাজ। তারা আমাদের হিন্দু ভাইদের হত্যা করেছে। এই ঘটনার উপযুক্ত জবাব দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। যখন ভারতীয় সেনারা তার জবাব দেবে, তখন আমাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। সেই কারণে আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমাদের বাঙ্কারগুলোকে প্রস্তুত রাখছি।”
এদিকে, কারগিল যুদ্ধের সময় এলওসির নিকটবর্তী হুন্দারমান গ্রামের ২১৭ জন বাসিন্দা একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং তারা সেই বাঙ্কারটি এখনও পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তবে সেই সময় সালোত্রি গ্রামে কোনো বাঙ্কার ছিল না। সেখানকার বাসিন্দাদের হামলার হাত থেকে বাঁচতে পুঞ্চ শহরে পালিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তাদের গ্রামেই সুরক্ষার জন্য বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে।
আরও দেখুন