জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনার পর, ভারত সরকার পাকিস্তানের সরকারি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস বন্ধ করে দিয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস)-এর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভারতের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়। ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কঠোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের ঘোষণা করেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই খবরটি সম্প্রচার করেছে।
বৈঠকে নয়াদিল্লি সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে মদদ ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কয়েক দশক পুরনো সিন্ধু নদীর পানি চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানে কর্মরত সিনিয়র কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং উভয় দেশের কূটনৈতিক মিশনে কর্মী সংখ্যা কমানো। ভারত ও পাকিস্তানের হাইকমিশনগুলোতে কর্মরত কর্মীদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হবে এবং এই প্রক্রিয়া [১ মে, ২০২৫]-এর মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
ভারত সরকার দিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে সকল প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাকে বহিষ্কার করেছে এবং তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারত ইসলামাবাদে তাদের নিজস্ব হাইকমিশন থেকেও সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করবে। উভয় দেশের মিশনে কর্মরত এসব উপদেষ্টাদের সঙ্গে যুক্ত পাঁচজন সহকারী কর্মীকেও প্রত্যাহার করা হবে।
আরও পড়ুন
এছাড়াও, ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সার্ক ভিসা ছাড়ের সুবিধা স্থগিত করার ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচির অধীনে পূর্বে ইস্যু করা সকল ভিসা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র চালু থাকা স্থল সীমান্ত পারাপার কেন্দ্র, আটারি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্টটিও অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মিস্রি জানিয়েছেন, বৈধ কাগজপত্র নিয়ে এই চেক পোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করা পাকিস্তানি নাগরিকরা ১লা মে, ২০২৫ এর পূর্বে দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এই কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াটি ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ এর পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পরদিন আসে, যেখানে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক প্রাণ হারান। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল উপস্থিত ছিলেন।
আরও দেখুন