বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন নিয়ে উদ্ভূত উত্তেজনা এখনো কাটেনি। এর মধ্যেই লাদাখে চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। ভারতীয় কূটনীতিতে একের পর এক সংকটের যোগ হওয়া সামগ্রিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এদিকে, পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ, যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একইসঙ্গে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পুরনো প্রসঙ্গ নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
ভারত মহাসাগরে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক ঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া নিয়ে চীন ও ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে চীন বাংলাদেশে তাদের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে মুদ্রার দরপতন এবং ধর্মীয় সংঘাতের কারণে চাপে রয়েছে। মণিপুরে সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দমনে মোদী সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রাধান্য দেওয়ার নীতির কারণে বিরোধী দল এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষোভ বেড়েছে।
আরও পড়ুন
কানাডায় শিখ নাগরিক হত্যার অভিযোগ মোদী সরকারের দিকে নির্দেশ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, খালিস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও মোদী সরকারের সমালোচনা অব্যাহত। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতের সরাসরি ভূমিকা ছিল। দুই দফা বিতর্কিত নির্বাচনে ভারতের সমর্থন ছাড়া আওয়ামী লীগের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হতো না বলে অনেকে মনে করেন।
মোদী সরকারের সামনে এখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ। সীমান্ত উত্তেজনা, অর্থনৈতিক চাপ, আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মধ্যে সরকার কতটা টিকে থাকতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রচেষ্টায় ভারতের নিজস্ব স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে, নেটিজেনরা এখন প্রশ্ন তুলছেন—মোদী সরকার কি এত চাপ সামলে দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে পারবে? সময়ই তার উত্তর দেবে।