বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বর্তমানে মধ্যপন্থী রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করে এগিয়ে চলেছে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) নির্বাহী পরিচালক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিল্লুর রহমান সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তার মতে, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশলে অত্যন্ত সতর্ক এবং সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, যা দলটির ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জিল্লুর রহমান জানান, বিএনপি উগ্রপন্থীদের প্রভাব থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও যৌক্তিক রাজনীতির পথে হাঁটছে। তারা সব পক্ষের মতামত শুনে, সময় নিয়ে এবং যথাযথ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এ কৌশল তাদের রাজনৈতিক পরিবেশে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তা করছে।
বিএনপির ভারতপন্থী হয়ে ওঠার অভিযোগের বিষয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, দলটি কোনো নির্দিষ্ট পরাশক্তির সঙ্গে সম্পূর্ণ জড়িয়ে পড়েনি। বরং, তারা একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করেছে। যেখানে দলের স্বার্থ যুক্ত, সেখানেই তারা সম্পর্ক স্থাপন করছে। তবে, দলটি প্রতিটি সম্পর্কেই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলছে।
আরও পড়ুন
বিএনপির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যক্রম—৩১ দফা কর্মসূচি, সংস্কার কমিটিকে দেওয়া ৬২ দফা সুপারিশ, এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তারেক রহমানের সময়োপযোগী বার্তাগুলো—সবকিছুই অত্যন্ত পরিপক্বতা ও দূরদর্শিতার পরিচায়ক। এই কৌশলগুলো বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে বিশ্লেষক মনে করেন।
জিল্লুর রহমানের মতে, বিএনপি আঞ্চলিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর চাপের মুখে পড়তে পারে। কারণ এসব দেশ নিজেদের স্বার্থে বিএনপিকে ব্যবহার করতে চাইবে। তবে, জনগণের ভালোবাসা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন বিএনপির জন্য একটি বড় শক্তি হয়ে দাঁড়াবে।
জিল্লুর রহমান বলেন, বিএনপি যদি বর্তমান পথ ধরে এগিয়ে যেতে পারে, তবে এটি তাদের জন্য জনগণের বিপুল সমর্থন ও আস্থা অর্জনের সুযোগ তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও তাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিবাচকভাবে দেখতে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির এই “গোছানো রাজনীতি” ভবিষ্যতে দেশের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা বয়ে আনতে পারে।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির মধ্যপন্থী অবস্থান এবং সুনির্দিষ্ট কৌশল দেশি-বিদেশি পরিমণ্ডলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে। জনগণের আস্থা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জন করে দলটি বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।