আফগানিস্তানে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে সন্ত্রাসীদের আস্তানা লক্ষ্য করে চালানো হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই এবং আফগান সংবাদমাধ্যম খামা প্রেস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের বারমাল জেলায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দফায় দফায় বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
Reports from Paktika indicate that following Pakistani airstrikes on the Barmal district of the province, 15 bodies, including women and children, have been pulled from the rubble, and one village has been completely destroyed.https://t.co/MSNuFYsfSY
— Khaama Press (KP) (@khaama) December 24, 2024
খামা প্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, পাকতিকা প্রদেশের বারমাল জেলার লামানসহ সাতটি গ্রামকে লক্ষ্য করে মঙ্গলবার রাতে এসব বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এই হামলায় একটি পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান এই বোমা হামলার জন্য দায়ী। প্রতিবেদনগুলোতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, বিমান হামলায় বারমালের মুর্গ বাজার গ্রামটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া বিমান হামলার ফলে বেসামরিক মানুষ গুরুতর ভাবে হতাহত হয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, যা এই অঞ্চলে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। হামলার পর উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত করতে এবং হামলার দায় স্পষ্ট করতে আরও তদন্ত প্রয়োজন বলে খামা প্রেস রিপোর্ট করেছে।
এদিকে পাকতিকার বারমালে বিমান হামলার পর তালেবানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আফগান এই মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের ভূখণ্ড এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা তাদের বৈধ অধিকার। একইসঙ্গে তারা এই হামলার নিন্দা করেছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানি কর্মকর্তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশটির সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, সীমান্তের কাছে তালেবানদের আস্তানাকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
আফগান ভূখণ্ডে পাকিস্তানের এই হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত জঙ্গিদের উপস্থিতি নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে। আর পাকিস্তান এই জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আফগান তালেবানকে অভিযুক্ত করে আসছে।