সফলতা কেবল ইচ্ছাশক্তির নয়, প্রয়োজন হয় সঠিক লক্ষ্য, গঠনমূলক প্রচেষ্টা ও ধারাবাহিক সাধনার। যাদের মূল্যবোধ ও জীবনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট, তাদের পথই হয় মসৃণ। এই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই প্রবাসে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন শরীয়তপুরের সন্তান আবু ইউসুফ রানা। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টে (NYPD) একজন পূর্ণাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
জন্ম শরীয়তপুরের চন্দ্রপুর ইউনিয়নের কীর্তিনগর গ্রামে হলেও বেড়ে ওঠা ঢাকার মধ্য বাড্ডায়। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। শৈশব থেকেই আত্মবিশ্বাসী ও মানবিক চেতনাসম্পন্ন ইউসুফ রানা, পারিবারিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিজেকে তৈরি করেছেন এক অনন্য সংগ্রামী জীবনের জন্য।
আরও পড়ুন
২০১৪ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ইউসুফ। ভর্তি হন নিউইয়র্ক সিটি কলেজ অব টেকনোলজিতে। কঠোর পরিশ্রম করে ২০২১ সালে তথ্যপ্রযুক্তিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রবাসজীবনের শুরুটা ছিল কঠিন—রেস্তোরাঁয় কাজ, ট্যাক্সি চালানো, নিজের খরচ চালাতে দিনের পর দিন শ্রম দিয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে ক্যাডেট হিসেবে যুক্ত হন ইউসুফ। ছয় বছরের প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতার পর ২০২৫ সালের মে মাসে তিনি পূর্ণাঙ্গ পুলিশ অফিসার হিসেবে শপথ নেন। এই গর্বের মুহূর্তে পাশে ছিলেন তার বড় ভাই জুয়েল রানা, যিনি নিজেও নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত।
ইউসুফ রানা মনে করেন, প্রবাসে থেকেও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ বজায় রাখা সম্ভব। তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশের সন্তান—এই পরিচয় আমার গর্ব। আমি চাই, আমার কাজের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ভালোবাসা ও বিশ্বাস গড়ে উঠুক।” প্রযুক্তির জ্ঞান ও পুলিশের দায়িত্ব একত্রে তিনি কাজে লাগাচ্ছেন জনকল্যাণে।
ইউসুফ রানার জীবনের গল্প আজ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা। কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিবেদন ও স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে যে যেকোনো সীমাবদ্ধতাকে জয় করা সম্ভব—তার জীবনই তার প্রমাণ।