যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গাঁজা খামারে অভিবাসন বিভাগ ICE-এর অভিযানে গুরুতর আহত হয়ে এক অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) অনুষ্ঠিত অভিযানে ৩০ ফুট উঁচু থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন জেমি অ্যালানিস নামে ওই শ্রমিক। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা যায়, অ্যালানিস গত ১০ বছর ধরে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং অভিযানের সময় তিনি ফোনে পরিবারের সদস্যদের জানান যে, তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একই অভিযানে প্রায় ২০০ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ১০ শিশু, যাদের মানব পাচার বা শিশু শ্রমের ঝুঁকিতে থাকার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার লাইসেন্সপ্রাপ্ত গাঁজা ও টমেটো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লাস হাউস ফার্মসে’ এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন, যাদের মধ্যে শ্রমিক ও বিক্ষোভকারী উভয়ই রয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে চারজন মার্কিন নাগরিককে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এক বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে গুলি ছোড়ার অভিযোগ এনে তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা কেবল বৈধ শ্রমিক নিয়োগ দেন এবং শিশু শ্রমের কোনো প্রমাণ নেই। আটক শ্রমিকদের জন্য তারা আইনি সহায়তার ব্যবস্থাও করছেন।
আরও পড়ুন
এদিকে, কৃষিশ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ইউনাইটেড ফার্ম ওয়ারকার্স’ জানিয়েছে, অভিযানের পর থেকে কয়েকজন মার্কিন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। সংগঠনটি দাবি করেছে, এ ধরনের অভিযান শ্রমিকদের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
এই ঘটনার পরদিনই লস অ্যাঞ্জেলেসের ফেডারেল বিচারক মা’মে ই. ফ্রিমপং সাতটি কাউন্টিতে এমন অভিযান ১০ দিনের জন্য স্থগিতের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কারণ ছাড়াই রোভিং প্যাট্রোল ও তল্লাশি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্থ ও পঞ্চম সংশোধনী লঙ্ঘন করে। বিচারক আরও বলেন, অভিবাসীদের আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে এবং জাতিগত প্রোফাইলিং বন্ধ করতে হবে। তার এই মন্তব্য অভিবাসন নীতির কঠোরতা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আওতায় কঠোর অভিবাসন পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছেন, যার আওতায় অনেককে বিচার ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।