যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিক চাপের সম্মিলিত চাপে বিপর্যস্ত অবস্থানে রয়েছেন। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য তাকে দেশের ভেতর ও বাইরে সমালোচনার মুখে ফেলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প এখন গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন নানা সিদ্ধান্ত ও ঘোষণায় ট্রাম্প বারবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। কখনও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার প্রস্তাব, কখনও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার ইচ্ছা কিংবা পানামা খাল পুনর্দখলের দাবি—এসব বিষয় পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়িয়ে তোলে। একই সঙ্গে বাণিজ্যনীতিতেও তিনি নানা কঠোর পদক্ষেপ নেন, যেমন একতরফা শুল্ক আরোপ ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে কর বসানো, যা ব্যাপক সমালোচিত হয়।
অভিবাসন নীতিতে কড়া অবস্থান আরও একবার দেশজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ট্রাম্প সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন, যা নাগরিক অধিকার প্রশ্নে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়। এসব ঘটনায় তার ‘আইন ও শৃঙ্খলার রক্ষক’ ইমেজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আরও বিভাজন সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
আরও পড়ুন
এদিকে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কও চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। স্পেসএক্স প্রকল্পে হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক হুমকির অভিযোগে মাস্ক ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। এক পর্যায়ে ট্রাম্পকে যৌন অপরাধী জেফরি অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে জড়ানোর অভিযোগ করে মাস্ক বিতর্কে আগুন ছড়ান, যদিও পরে তা মুছে দেন। এরই প্রভাব পড়ে টেসলার শেয়ারে, যা ১৪ শতাংশ হ্রাস পায়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ট্রাম্পের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে তার অবস্থান পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে মতপার্থক্য সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। শুধু বিরোধী ডেমোক্র্যাট নয়, তার নিজ দল রিপাবলিকানের ভেতরেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বহুমাত্রিক চাপের মুখে থাকা ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন মারাত্মক অনিশ্চয়তার মুখে।