যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু হামলার আশঙ্কা বা বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতিতে কারা বাঁচবে, কোথায় যাবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা—এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে এসেছে ভূগর্ভস্থ এক গোপন জগতের সম্ভাব্য অস্তিত্ব। সম্প্রতি এক পডকাস্টে সাবেক মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা ক্যাথরিন অস্টিন ফিটস দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার গোপনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে গড়ে তুলেছে অত্যাধুনিক বাঙ্কার নেটওয়ার্ক।
ক্যাথরিনের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রায় ২১ লাখ কোটি ডলার খরচ করে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ১৭০টি ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি। এসব বাঙ্কারের কিছু নাকি সমুদ্রের নিচেও অবস্থান করছে। তিনি জানান, এগুলো সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়, বরং অভিজাত, ধনী ও ক্ষমতাধরদের জন্য নির্মিত হয়েছে। এর বাইরেও, তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, এসব বাঙ্কার গোপন মহাকাশ প্রকল্প ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই বক্তব্য তিনি দিয়েছেন টাকার কার্লসনের একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে, যেখানে তিনি ‘স্কিডমোর রিপোর্ট’ নামের একটি গবেষণার উল্লেখ করেন। ২০১৭ সালে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ মার্ক স্কিডমোরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও গৃহ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অননুমোদিত আর্থিক লেনদেন হয়েছে, যার কোনো সরকারি হিসাব নেই। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫ সালে সেনাবাহিনীর বরাদ্দ ছিল ১২২ বিলিয়ন ডলার, অথচ তারা হাতে পেয়েছে ৬.৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন
ক্যাথরিনের দাবি, এই গোপন অর্থ দিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণ, উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন বাঙ্কার। তার মতে, এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এমন শক্তি ব্যবস্থাও থাকতে পারে যা বাইরের জগতের সহায়তা ছাড়াই এগুলো চালু রাখতে সক্ষম।
তবে ক্যাথরিনের এই দাবির পক্ষে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। ফলে অনেকে একে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেই দেখছেন, বিশেষ করে ক্যাথরিন অতীতেও কোভিড টিকা ও বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
তবু বিশাল অঙ্কের অদৃশ্য লেনদেন এবং সরকারের নীরবতা—এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে গোপন বাঙ্কার নির্মাণ সংক্রান্ত বিতর্ক এবং জনমনে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।