যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ক্ষেত্রে নতুন এবং বিতর্কিত এক পদ্ধতির সূচনা হয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, মূলত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসও এই বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাদের হামাসের সমর্থক হিসেবে গণ্য করা হবে, তাদের ভিসা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করার জন্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
ফক্স নিউজের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এরই মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীকে হামাসের সমর্থক অথবা তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
এক্সিওসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নে বিচার বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। যদিও এই বিষয়ে সরাসরিভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক মাধ্যমে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি কার্যকর রয়েছে। আইন লঙ্ঘনকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে, অন্য দুটি বিভাগ এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অ্যান্টিসেমিটিজম মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিনপন্থী যে সকল বিদেশি শিক্ষার্থী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল, তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে। এই নতুন ভিসা বাতিল প্রক্রিয়া সেই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকে।
এই নতুন পদ্ধতি ভিসা প্রক্রিয়াকরণে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে এবং একই সাথে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।