নাইজেরিয়ার জামফারা রাজ্যের বাঙ্গা গ্রামে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনায় মুক্তিপণ দেওয়ার পরও অন্তত ৩৫ জন অপহৃতকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা দেশটির উত্তরাঞ্চলে ক্রমবর্ধমান অপহরণকেন্দ্রিক সহিংসতার নির্মম চিত্র তুলে ধরেছে।
জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসে জামফারার কাওরা নামোদা এলাকা থেকে মোট ৫৬ জনকে অপহরণ করে দস্যু দলের সদস্যরা। অপহৃতদের প্রতিটির জন্য এক মিলিয়ন নাইরা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে পৌঁছে কিছু অর্থ পরিশোধ করা হলে শনিবার ১৮ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়, যাদের মধ্যে ছিলেন ১৭ জন নারী ও এক কিশোর।
কাওরা এলাকার স্থানীয় সরকার চেয়ারম্যান মাগ্নিরু হাইদারা জানান, বাকি অপহৃতদের বেশিরভাগই তরুণ এবং তাদের “ভেড়ার মতো জবাই” করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু না থাকলেও তিনি বলেছেন, “এই দস্যুরা সম্পূর্ণ হৃদয়হীন। তারা বুঝতেই পারছে না, তারা তাদের নিজেদের মানুষকে হত্যা করছে।”
আরও পড়ুন
এদিকে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৬ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতদের মরদেহ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম, কারণ নাইজেরিয়ায় সাধারণত অপহরণের পর নিহতদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হয় না।
উল্লেখ্য, অপহরণ বন্ধে নাইজেরিয়া সরকার ২০২২ সালে একটি আইন প্রণয়ন করে, যাতে মুক্তিপণ দেওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় এবং এর জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। নিহতের ঘটনা ঘটলে, দণ্ড হতে পারে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত। তবে আইনটি কার্যকর হলেও এখনো পর্যন্ত এর আওতায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করে অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে অপহরণকারীদের অর্থ দিয়ে থাকে।