সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক ছাড়া অনেকের চলেই না। নিজের সারাদিনের আপডেট দেওয়ার পাশাপাশি ভার্চুয়াল বন্ধুদেরও খোঁজখবর নেয়া হয় ফেসবুকের মাধ্যমে। ছবি, ভিডিও, রিলস কিংবা স্ট্যাটাসে দারুণভাবে সময় কেটে যায় মেটার এই প্ল্যাটফর্মে।
মেটার মালিকানাধীন ফেসবুকে রয়েছে কয়েকশ কোটি ব্যবহারকারী। এমনকি অনেকের আয়ের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুক। জানলে অবাক হতেও পারেন যে, বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ। চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের এমন দেশগুলো সম্পর্কে-
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৬ সালে ফেসবুককে ব্লক করে। এমনকি ঘোষণা করে যে কেউ ‘অনুপযুক্ত’ উপায়ে তাদের অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করলে বা এর থেকে ‘প্রজাতন্ত্র বিরোধী ডেটা’ বিতরণ করলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। যদিও নিষেধাজ্ঞার আগে, অল্প কয়েকজন উত্তর কোরিয়ানের বিশ্বব্যাপী ওয়েবে অ্যাক্সেস ছিল এবং বেশিরভাগই সরকার নিয়ন্ত্রিত ইন্ট্রানেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
আরও পড়ুন
চীন
২০০৯ সাল থেকে চীনে ফেসবুক নিষিদ্ধ। জিনজিয়াং প্রদেশে মারাত্মক দাঙ্গার পর কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে মেটা মালিকানাধীন ফেসবুক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। চীনে বিদেশি মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতা এবং বেসরকারি কন্টেন্টের সেন্সরশিপকে ‘চীনের গ্রেট ফায়ারওয়াল’ বলা হয়। চীনে মেটার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ এবং এর ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তুর্কমেনিস্তান
মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র তুর্কমেনিস্তানে ফেসবুক নিষিদ্ধ। ফেসবুক ব্লক করার পাশাপাশি, তুর্কমেনিস্তান হোম ইন্টারনেট সংযোগের জন্য সাইন আপ করার সময় পবিত্র কোরআনের শপথ নিতে বলে যে তারা ভিপিএন অ্যাক্সেস করবে না। শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সাইটগুলোতে অ্যাক্সেস করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।
ইরান
ইরানেও ২০০৯ সালে বিতর্কিত নির্বাচন এবং গণবিক্ষোভের মধ্যে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাক্সেস করেন। এরপর ইরান সরকার ভিপিএন-এর ব্যবহার আইনত অপরাধ ঘোষণা করে। ২০২০ সালে চীনের সঙ্গে মিলে একটি জাতীয় ইরানি ইন্টারনেট তৈরি করছে বলে ঘোষণা দেয় ইরান।
কিউবা
কিউবায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু এটি অ্যাক্সেস করা খুব কঠিন। শুধু রাজনীতিবিদ, কিছু সাংবাদিক এবং মেডিকেল স্টুডেন্টরা তাদের বাড়ি থেকে আইনত ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। অন্য সবার জন্য অনলাইন জগতের সঙ্গে আইনিভাবে সংযোগ করার একমাত্র উপায় হল ইন্টারনেট ক্যাফে।
কিউবার গড় আয় ২০ মার্কিন ডলার। আর ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে প্রতি ঘণ্টায় ৬ মার্কিন ডলার থেকে ১০ মার্কিন ডলারের খরচ হয়। ফলে এত খরচ দিয়ে বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠে না।