প্রশিক্ষণ চলাকালে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে দগ্ধ হওয়া চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আয়মান অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে সোমবার (২১ জুলাই) এই দুর্ঘটনা ঘটে। ক্লাস শেষে স্কুলের দোলনায় দোল খাওয়ার সময় আকস্মিকভাবে বিমানটি বিধ্বস্ত হলে আয়মানের শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে যায়। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়।
শুক্রবার বিকেলেই আয়মানের প্রথম জানাজা হয় ঢাকার উত্তরায় এবং পরে রাত ৯টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে। আয়মান স্থানীয় বাসিন্দা বাপ্পি হাওলাদার ও আয়েশা আক্তার কাকন দম্পতির মেয়ে। জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তার দাদার কবরের পাশে।
আরও পড়ুন
ঘটনার দিন ক্লাস শেষে প্রতিদিনের মতো স্কুলের দোলনায় খেলছিল আয়মান। হঠাৎ বিকট শব্দে একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান স্কুলে আছড়ে পড়ে। সেই সঙ্গে বিমানের জ্বালানি তার শরীরে ছিটকে পড়ে দগ্ধ করে দেয়। আহত অবস্থায় নিজেই এক শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ফোন করে পরিবারকে জানায় সে। পরে তার বাবা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং পরে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করান মেয়েকে।
আয়মানের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া। প্রতিবেশী সিনহা জুয়ালিদ রাফি বলেন, “আয়মান যখন বাড়িতে আসতো, সবার সঙ্গে মিষ্টি করে কথা বলতো, আমাকে জড়িয়ে ধরতো। সে ছিল সবার আদরের, আজ তাকে এভাবে হারাতে হলো।” আয়মানের ছোট মামা শামীম আহম্মেদ দাবি করেন, “যেখানে জনবসতি, সেখানে কিভাবে প্রশিক্ষণ বিমান নামার চেষ্টা করে? তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করতে হবে, যাতে আর কোনো আয়মান হারিয়ে না যায়।”
ভেদরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক জানান, এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। নিহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছে।