ভারতের হিমাচল প্রদেশে সম্প্রতি ঘটেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী বিয়ের ঘটনা। প্রদেশটির সিরমাউর জেলার ট্রান্স-গিরি এলাকায় হট্টি জনগোষ্ঠীর প্রাচীন ‘পলিয়ান্ড্রি’ প্রথা অনুসরণ করে আপন দুই ভাই মিলে বিয়ে করেছেন একই নারীকে। তিনদিনব্যাপী আয়োজিত এই ঐতিহ্যবাহী বিয়েতে শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ের কনে সুনীতা চৌহান এবং বর দুই ভাই—প্রদীপ ও কপিল নেগি—জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত তারা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের ইচ্ছায় নিয়েছেন। পরিবার কিংবা সমাজের কোনো চাপ ছিল না। বর প্রদীপ একজন সরকারি কর্মকর্তা, আর তার ছোট ভাই কপিল কাজ করেন বিদেশে। তারা জানান, ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা, লোকগান ও নৃত্যে ভরপুর তিনদিনের এই আয়োজনের একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। হিমাচলের রাজস্ব আইনে এই ধরনের বহুবিবাহকে ‘জদিদারা’ নামে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু বাধানা গ্রামেই গত ছয় বছরে অন্তত পাঁচটি এই ধরনের বিয়ের নজির রয়েছে।
আরও পড়ুন
সুনীতা বলেন, “আমি এই প্রথা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতাম এবং নিজের ইচ্ছায় এতে রাজি হয়েছি।” অন্যদিকে, প্রদীপ জানান, “আমরা আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করি। গোপনে কিছু করিনি, বরং সবার সামনে সম্মানের সঙ্গে বিয়েটা করেছি।” কপিল যোগ করেন, “আমি দেশে না থাকলেও, আমাদের স্ত্রীকে আমরা ভালোবাসা, সম্মান ও দায়িত্বের সঙ্গে আগলে রাখব।”
উল্লেখ্য, হট্টি জনগোষ্ঠী মূলত হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাস করে। তিন বছর আগে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘তালিকাভুক্ত উপজাতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যদিও ভারতের আইনে একাধিক বিবাহ বৈধ নয়, তবু ঐতিহ্যগতভাবে হিমাচলের কিছু এলাকায় এই প্রথা এখনো সচল রয়েছে।