সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলন তীব্র রূপ নিয়েছে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ৩ জুলাই বুধবার রাজধানীসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত সাত কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল দোয়েল চত্বর ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ঘুরে এসে বিকেল পৌনে চারটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভকারীরা ‘মেধা না কোটা, চাই মেধাভিত্তিক নিয়োগ’, ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল চাই’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’—এমন নানা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে শাহবাগ মোড়। তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদী গান পরিবেশন ও বক্তব্য প্রদান করা হয়। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানান, ৪ জুলাই হাইকোর্টে যে শুনানি রয়েছে, সেটির রায় যেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে, সে প্রত্যাশা রয়েছে।
আরও পড়ুন
ঢাকার বাইরেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেলপথ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসব কর্মসূচির কারণে বিভিন্ন এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
এছাড়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পৃথকভাবে মিছিল, সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ করেন। তাদের একমাত্র দাবি—কোটা বাতিল করে আগের মেধাভিত্তিক নিয়োগব্যবস্থা বহাল রাখা।
চলমান আন্দোলন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং এটি কতদিন ধরে চলবে বা কীভাবে সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।