যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি উৎপাদনে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শাকসবজি ও তিন-চতুর্থাংশ ফলমূল এই অঞ্চল থেকেই সরবরাহ হয়। ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার কৃষি খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার। উৎপাদনে এমন সাফল্যের মাঝেও এখন গভীর সংকটে পড়েছে এই খাত— প্রধানত শ্রমিক সংকটের কারণে।
কৃষিকাজে নির্ভরশীল অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে ভরসা করে আসছে ক্যালিফোর্নিয়ার কৃষি খাত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ (আইস)-এর কঠোর অভিযানের ফলে অনেক অবৈধ অভিবাসী শ্রমিক গ্রেপ্তার ও জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় যে কঠোর অভিবাসন নীতি শুরু হয়েছিল, তা আবারও জোরালোভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
এর ফলে লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরাঞ্চল থেকে শুরু করে সেন্ট্রাল ভ্যালি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে সময়মতো ফসল কাটতে না পারায় মাঠেই পচে যাচ্ছে শাকসবজি ও ফলমূল। এক কৃষক জানান, “ফল ও সবজি দ্রুত না তুললে রোদে নষ্ট হয়ে যাবে, রঙ পরিবর্তন হবে, আর বাজারে বিক্রি করা যাবে না। এতে আমাদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।”
আরও পড়ুন
শুধু কৃষক নয়, পুরো কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিই এখন চাপে পড়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় খাদ্য সরবরাহ চেইনেও ব্যাঘাত ঘটছে। যেসব শ্রমিক এখনও ধরা পড়েননি, তারাও প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন। এক অভিবাসী শ্রমিক বলেন, “প্রতিদিনের রোজগারেই আমাদের সংসার চলে। কিন্তু প্রতিদিন কাজের মাঠে গিয়ে ভয় নিয়ে দিন কাটানো খুব কঠিন।”
আইস-এর অভিযানের ফলে প্রাথমিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও, অনেকে পরে আবার কাজে ফিরেছেন— জীবনের প্রয়োজনে। তবে অনিশ্চয়তা ও ভয়ের ছায়া এখনও তাদের পিছু ছাড়ছে না, যা ক্যালিফোর্নিয়ার কৃষি উৎপাদনের ভবিষ্যতকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।