১৫ বছর পর দেশে এসে ছেলের মৃত্যুর খবর পেলেন প্রবাসী

Expatriate returns home after 15 years, receives news of son's death

মাত্র দুই বছর বয়সে বাবার মমতা হারিয়েছিল নুরুদ্দিন। জীবিকার তাগিদে বাবা কামাল হোসেন পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অবশেষে তিনি দেশে ফিরলেন মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে। কিন্তু বাড়িতে ফিরেই তাকে অপেক্ষা করছিল জীবনের সবচেয়ে নির্মম দৃশ্য—তার একমাত্র সন্তান নুরুদ্দিনের নিথর দেহ।

সদ্য এসএসসি পাস করা নুরুদ্দিন তাবলিগ জামাতের ৪০ দিনের ‘চিল্লা’তে বন্ধুদের সঙ্গে অংশ নিয়েছিল। চিল্লার মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র চার দিন বাকি ছিল। বাড়ি ফিরে বাবার সঙ্গে বহুদিন পর সাক্ষাৎ করার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হয়নি। সন্ধ্যায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কুমার নদীর সেতু থেকে পড়ে নুরুদ্দিনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গার দক্ষিণপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কুমার নদীর ব্রিজে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল নুরুদ্দিন। মাগরিবের আজান পড়লে সে একাই দ্রুত মসজিদের দিকে রওনা হয়। অন্ধকারে ব্রিজের পাশে পড়ে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে। দ্রুত ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুদ্দিন ছোটবেলা থেকেই ধর্মপরায়ণ ছিল। পঞ্চম শ্রেণি থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ত এবং দ্বীনের প্রতি আগ্রহ থেকেই বন্ধুদের নিয়ে চিল্লায় বের হয়। বন্ধু মহাসেন জানায়, “নুরুদ্দিন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত, ধার্মিক ও অনুপ্রেরণাদায়ী ছিল। তার উৎসাহেই আমরা চিল্লায় যাই। এখন কী করে ওর বাবা-মাকে বোঝাব?”

ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফ হোসেন জানান, নুরুদ্দিন দুর্ঘটনাক্রমে ব্রিজ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

City offer 2025