যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলার পর যখন ইরান তার মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে প্রত্যক্ষ সমর্থন আশা করছে, তখন রাশিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, রাশিয়া বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে বিবেচনা করছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে এক আলোচনায় পুতিন বলেন, “ইসরায়েলে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ রুশভাষী মানুষ বসবাস করছেন, যা দেশটিকে রুশ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করেছে। ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, এবং এ বাস্তবতা রুশ পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিফলিত হয়।”
তিনি আরও জানান, রাশিয়ার জনসংখ্যার একটি বড় অংশ মুসলিম হওয়ায় মুসলিম বিশ্বের সঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে মস্কোর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এই দ্বিপাক্ষিক ভারসাম্যের দিকটি রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন
রাশিয়াকে ঘিরে সমালোচনার জবাবে পুতিন বলেন, “রাশিয়ার বিরুদ্ধে পক্ষ না নেওয়ার অভিযোগ রাজনৈতিক প্ররোচনার অংশ। আমরা সবসময় আরব ও ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখেছি এবং ভবিষ্যতেও রাখবো।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে এক সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্ডো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে বিশেষ বাংকার-ধ্বংসকারী বোমা ব্যবহৃত হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, এই অভিযানে ইরানের পরমাণু সক্ষমতা চূর্ণ করা হয়েছে।
হামলার জবাবে ইরান ইসরায়েলের দিকে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে এবং জানায়, প্রতিশোধ নেওয়ার পরই কেবল তারা আলোচনায় ফিরবে। একইসঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘আলোচনার সুযোগ ধ্বংসের’ অভিযোগ তোলে। পুতিন ইতিপূর্বে ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করে কটাক্ষ করে বলেন, “আগে নিজের দেশের সমস্যার সমাধান করুন, তারপর অন্যের ব্যাপারে কথা বলুন।”