সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণও প্রদান করবেন বলে জানিয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এই সফরকে সিরিয়ার জন্য কূটনৈতিকভাবে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সফরটি এমন এক সময় হতে যাচ্ছে, যখন গত মে মাসে সৌদি রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আল-শারার মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত দুই যুগের বেশি সময় পর সিরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে এটি ছিল প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। ওই বৈঠকে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
রিয়াদের আলোচনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নিষেধাজ্ঞা হঠাৎ তুলে নেয়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আল-শারা একে ‘ঐতিহাসিক ও সাহসী পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এটি সিরিয়ার জনগণের দুর্ভোগ কমাবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে দেশটির তৎকালীন সরকার ব্যাপক দমন-পীড়নে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিমা বিশ্ব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে দেশটির অর্থনীতি চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়। আল-শারা, যিনি একসময় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখন নিজেকে একটি বাস্তববাদী ও জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের ফলে আল-শারার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তিনি সিরিয়ার পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুনরায় একীভূত হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করেছে—সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে সিরিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি ছাড়া পূর্ণ কূটনৈতিক সমর্থন দেওয়া হবে না।
উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৬৭ সালের পর এই প্রথমবার কোনো সিরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। ফলে আল-শারার আসন্ন নিউইয়র্ক সফরকে সিরিয়ার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।