ভারতের সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহা সম্প্রতি দাবি করেছেন, চীনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় বাংলাদেশ লালমনিরহাটের পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি আবারও সচল করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগকে তিনি ভারতের জন্য একটি বড় কৌশলগত হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, বিশেষ করে এটি শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি হওয়ায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুব্রত সাহা আরও বলেন, ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো সামরিক অভিযান প্রয়োজনে বাংলাদেশেও চালানো হতে পারে। তার ভাষায়, এমন কোনো ঘাঁটি যা ভারতের নিরাপত্তায় হুমকি তৈরি করবে, তা গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ভারত প্রস্তুত।
সাহার মতে, বাংলাদেশ বর্তমানে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে একটি নতুন কৌশলগত অক্ষ গড়ে তুলছে, যার লক্ষ্য ভারতের নিরাপত্তা কাঠামোয় চাপ সৃষ্টি করা। তিনি এমনকি রংপুর অঞ্চলে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর উপস্থিতির অভিযোগও এনেছেন, যা বিষয়টিকে আরও স্পর্শকাতর করে তুলছে।
আরও পড়ুন
সাম্প্রতিক কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ লালমনিরহাট বিমানঘাঁটিতে কিছু প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে এবং সেখানে চীনা কর্মকর্তারাও ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এখনো বাংলাদেশ বা চীনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমন প্রেক্ষাপটে ভারত তাদের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে। রাফাল যুদ্ধবিমান মোতায়েন, রামপুর সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, এবং এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলোকে কিছু বিশ্লেষক আগ্রাসী ও অতিপ্রতিক্রিয়াশীল হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বাংলাদেশ সরকার চীনের সহায়তায় ঘাঁটি নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, পুরনো অবকাঠামো পুনরুদ্ধার ও জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যেই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে উপমহাদেশে ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।