আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন তার প্রাণে বাঁচার কথা ছিল না। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল’-কে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো গণমাধ্যমের সামনে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিনের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিজের সংসদ এলাকার বাসা ছেড়ে পাশের আরেকটি বাসায় আশ্রয় নেন তিনি। তবে সেখানেও হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার স্ত্রীসহ পাঁচ ঘণ্টা বাথরুমে লুকিয়ে ছিলাম। এমনকি বাথরুমের ভেতরের কমোড, বেসিন পর্যন্ত ভাঙচুর ও লুটপাট করে তারা।”
তিনি আরও জানান, কিছু সময় পরে কয়েকজন যুবক বাথরুমে ঢুকে পড়ে। শুরুতে তারা হুমকি দিয়ে কথা বললেও হঠাৎ তাদের আচরণ পাল্টে যায়। কেউ ছবি তুলতে চায়, কেউ সেলফি নেয়। ওবায়দুল কাদের মনে করেন, এদের কেউ কেউ তাকে চিনতে পেরেছিল এবং সে কারণেই তারা সরাসরি ক্ষতি না করে আচরণ পরিবর্তন করে।
আরও পড়ুন
এরপর ওই যুবকদের কেউ কেউ তাকে জনতার হাতে কিংবা সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে তারা তাকে একটি লাল ব্যাজ ও কালো মাস্ক পরিয়ে বাইরে বের করে। তখন হঠাৎ একটি খালি ট্যাক্সি বা ইজি বাইক এসে হাজির হয় এবং দুইজন যুবক তাকে ও তার স্ত্রীকে সেই গাড়িতে তোলে। গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে তারা পথের লোকজনকে বলেন, ‘চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’
সেদিনের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যারা কয়েক মিনিট আগে জোর করে বাথরুমে ঢুকেছিল, তারাই আমাদের প্রাণ বাঁচাল—এটা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে ফিরেছি। সেই দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যের দিন।”