গোপনে পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে করায় বহিষ্কার

Expelled for secretly marrying a pakistani woman

এক পাকিস্তানি নারীকে বিবাহের বিষয়টি গোপন রাখার অভিযোগে ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) তাদের এক জওয়ানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মুনির আহমেদ নামের ওই জওয়ানকে বাহিনী থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মুনিরের বিরুদ্ধে শুধু বিয়ের তথ্য গোপন করাই নয়, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তার স্ত্রীকে জেনেশুনে ভারতে অবস্থানের ক্ষেত্রে সহায়তা করার অভিযোগও রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় সিআরপিএফের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত জওয়ানের এই ধরনের কার্যকলাপ বাহিনীর চাকরির নীতি ও আচরণের পরিপন্থী। এছাড়াও, সিআরপিএফ মনে করে যে এটি দেশের নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকর। এই কারণে, তাকে অবিলম্বে আধাসেনা বাহিনী থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি পেহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, দীর্ঘমেয়াদী এবং কূটনৈতিক ভিসার ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। স্বল্পমেয়াদী ভিসায় ভারতে আসা পাকিস্তানিদের গত ২৭শে এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যাদের মেডিক্যাল ভিসা ছিল, তাদের জন্য আরও দু’দিনের সময় বাড়ানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে, জম্মু ও কাশ্মীরে কর্মরত সিআরপিএফ জওয়ান মুনিরের বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। স্ত্রীকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো রুখতে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মুনিরের দায়ের করা মামলাটি এখনও জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টে বিচারাধীন। মুনিরের স্ত্রী মিনাল খান আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে আদালত থেকে একটি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ লাভ করেন। আগামী ১৪ই মে এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে এবং আদালত কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে।

আদালতে যখন এই মামলার শুনানি চলছিল, তখন মিনাল খান শ্রীনগরে অন্যান্য পাকিস্তানি নাগরিকদের সাথে বাসে করে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তের দিকে রওনা হয়েছিলেন। সীমান্তে পৌঁছানোর ঠিক আগ মুহূর্তে তিনি তার আইনজীবীর কাছ থেকে ফোন পান এবং স্থগিতাদেশের বিষয়টি জানতে পারেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই আধাসেনা বাহিনী ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে। ‘ইন্ডিয়া টুডে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআরপিএফের অভ্যন্তরীণ তদন্তে মুনিরের বিরুদ্ধে বিবাহ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসায় স্ত্রীর ভারতে থাকার তথ্য গোপন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর পরই বাহিনী তার বিরুদ্ধে এই কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ভারতীয় গণমাধ্যম আরও জানায়, মুনিরের স্ত্রী মিনাল খানের পৈতৃক নিবাস পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সিয়ালকোট শহরে। ২০২৪ সালের মে মাস থেকে এই জওয়ানের সাথে তার অনলাইনে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং অনলাইনেই তাদের বিবাহ (নিকাহ্‌) সম্পন্ন হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মিনাল একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা নিয়ে ভারতে আসেন। তবে, চলতি বছরের ২২শে মার্চ সেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। জানা গেছে, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মিনালকে একটি ‘এগজিট পারমিট’ দেওয়া হয়েছিল, যা সাধারণত ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর অথবা ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন বিচারাধীন থাকাকালীন বিদেশিদের দেশত্যাগের জন্য মঞ্জুর করা হয়। তবে, দম্পতির আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, সেই ‘এগজিট পারমিট’টি বর্তমানে বাতিল করা হয়েছে।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Probashir city web post