আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, নারী কমিশন তৈরির জন্য কেউ জুলাই বিপ্লবে জীবন উৎসর্গ করেনি। তার মতে, জীবন দেওয়া হয়েছিল দেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে মুক্ত করার জন্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য।
মাহমুদুর রহমান ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি না করেন। তিনি বলেন, সরকার এমন অনেক সংস্কার কমিশন গঠন করেছে যেগুলোর আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল না। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের মূল্যবান সময় ও সম্পদ নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান, একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে তারা যেন এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় কমিশন বাতিল করে দেন।
আরও পড়ুন
হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত এই মহাসমাবেশে মূলত চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল করা, সংবিধানে বহুত্ববাদের প্রস্তাব বাতিল করে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার এবং শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডসহ সকল গণহত্যার বিচার করা, এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিমদের উপর ‘গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধে’ সরকারের ভূমিকা রাখা।
হেফাজতের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, নারীবাদ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যেন বৃহত্তর আন্দোলন থেকে তারা সরে না যান। তিনি মনে করিয়ে দেন, তাদের বৃহত্তর লড়াই হলো ভারতের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং ইসলামের জন্য সংগ্রাম। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের আলেমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর প্রবাসে নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে মাহমুদুর রহমান গত বছর দেশে ফেরেন। এরপর একটি মামলায় তিনি খালাস পান। সমাবেশে তিনি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং এই প্রথম স্বাধীনভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে, তিনি হেফাজতের পক্ষ থেকে শাপলা চত্বরের ‘গণহত্যা’র দায়ে এখনো কোনো মামলা দায়ের না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং নিহতদের সকলের হয়ে দানব ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করার আহ্বান জানান।