বিশ্ববাজারে ডলারের বড় ধস, বেড়ে যাচ্ছে ইউরো-ইয়েন-পাউন্ডের দাম !

বিশ্ববাজারে ডলারের বড় ধস, বেড়ে যাচ্ছে ইউরো ইয়েন পাউন্ডের দাম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে আক্রমণ করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে ফেডের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে এবং বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল ‘বড় ধরনের ব্যর্থ’ হয়েছেন এবং অবিলম্বে নীতিগত সুদের হার কমানো উচিত। এর ফলে ইউএস ডলার ইনডেক্স ৯৭.৯২৩-এ নেমে এসেছে, যা ২০২২ সালের মার্চের পর সর্বনিম্ন। সুইস ফ্রাঁ ও জাপানি ইয়েনের বিপরীতেও ডলারের দরপতন হয়েছে। প্রতি ইউরোর বিনিময়ে এখন ১.১৫ ডলার পাওয়া যাচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা জেরোম পাওয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন। যদিও ফেড চেয়ারম্যান সরাসরি প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে নন, তাই তাকে অপসারণ করতে নির্দিষ্ট আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। তবে প্রেসিডেন্টের চাপে ফেডের স্বায়ত্তশাসন ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে সরে যাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলারের ওপর থেকে এই আকর্ষণ কমে আসছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান স্টক সূচকেরই ২ শতাংশের বেশি পতন হয়েছে, যেখানে প্রযুক্তি খাতভিত্তিক নাসডাক সূচকের পতন সবচেয়ে বেশি।

গত কয়েক মাস ধরেই ডলার দুর্বল হচ্ছে। ১৮ এপ্রিল ইউএস ডলার ইনডেক্সের মান ছিল ৯৯.২৩, যেখানে জানুয়ারিতে এই সূচক ছিল ১১০। অর্থাৎ, তিন মাসেই প্রায় ৯.৩১ শতাংশ কমেছে। ১১ এপ্রিল সূচকটি ২০২৩ সালের জুলাইয়ের পর প্রথমবার ১০০-এর নিচে নেমে আসে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও আর্থিক নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ এবং সম্ভাব্য মন্দার আশঙ্কায় ট্রেজারি বন্ডের চাহিদাও কমে গেছে। এর ফলে মার্কিন সরকারকে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলীয় ডলার, নিউজিল্যান্ড ডলার এবং ব্রিটিশ পাউন্ডের মান বেড়েছে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মান প্রতি ডলারে ১.৩৪ ডলার, যা গত সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলীয় ডলারেও চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দর দেখা গেছে।

করপের প্রধান বাজার বিশ্লেষক কার্ল স্কামোটা বলেন, ফেড যদি তার মূল লক্ষ্য—মূল্য স্থিতিশীলতা ও কর্মসংস্থান—থেকে সরে গিয়ে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে, তাহলে ভবিষ্যতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
আরও দেখুন

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Gif final ezgif.com optimize