বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে নিজের অপরাধবোধের কারণ জানালেন ড. ইউনূস

বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে নিজের অপরাধবোধের কারণ জানালেন ড. ইউনূস

আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে এক আবেগঘন অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন নোবেল বিজয়ী ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পহেলা বৈশাখের প্রাক্কালে ঐতিহাসিক এই স্থানে এসে তিনি নিজেকে “সৌভাগ্যবান” মনে করছেন বলে মন্তব্য করেন।

“আমাকে এখানে আসতে বলা হয়েছিল, আমি এটাকে একটা দৈনন্দিন কাজ হিসেবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু এখানে এসে বুঝলাম, আমি একটা ঐতিহাসিক কাজের অংশ হতে পেরেছি,” বলেন ইউনূস। তিনি আরও জানান, এত মনোমুগ্ধকর একটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান তার বাসা থেকে মাত্র ১০ মিনিট দূরে হলেও কখনো আসা হয়নি, যা তাকে অপরাধবোধে ভাসিয়েছে।

তিনি সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “সেনাবাহিনী যেভাবে সম্প্রীতি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদের এই উদ্দ্যোগ আন্তরিক ও হৃদয়গ্রাহী।”

ড. ইউনূস মনে করেন, এই বৌদ্ধ বিহার শুধুমাত্র বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য নয়, বরং এটি দেশের সকল মানুষের জন্য ঐতিহাসিক গৌরবের স্থান। “এটি এক খণ্ডিত ধর্মীয় ধারণার বিষয় নয়, বরং জাতির ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ,” বলেন তিনি।

নিজ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি বলেন, “আজ যদি না আসতাম, জানতেই পারতাম না এমন একটা চমৎকার স্থান এখানে আছে। দেশের অনেকেই এর সম্পর্কে জানেন না। আমাদের উচিত আমাদের সন্তানদের এখানে নিয়ে আসা, যাতে তারা এই ঐতিহ্যকে জানতে পারে, ভালোবাসতে পারে।”

সম্প্রতি চীন সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “চীনে প্রতিটি সভায় আমি অতীশ দীপঙ্করের কথা বলেছি—কীভাবে তিনি এই দেশ থেকে হিমালয় পার হয়ে চীনে গিয়েছিলেন এবং বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন। অথচ আমরা নিজেরাই জানি না তার অবদানের কথা, এমনকি তার বাড়ি পর্যন্ত যাইনি।”

তিনি আরও বলেন, “অতীশ দীপঙ্করের ইতিহাস মুছে ফেলার নয়, বরং গর্বের সঙ্গে তুলে ধরার মতো ইতিহাস। তিনি আমাদেরই সন্তান, আমাদেরই পাড়ার মানুষ। সেই সময়ে কোনো যানবাহন না থাকলেও তিনি সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করে চীন গিয়েছিলেন। আজও তাকে সে দেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে তার এই বক্তব্যে মুগ্ধ হন এবং ভবিষ্যতে এমন ঐতিহাসিক স্থান ও ব্যক্তিত্বদের প্রতি আরও যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
আরও দেখুন 

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Gif final ezgif.com optimize